বাঙালি ক্রীড়ামোদী এ কথা অনেকেই মানবে। কিন্তু তার বিজ্ঞাপন দিতে অহোরাত্র এই ‘খেলা হবে’, ‘খেলা হবে’ বলে চিলচিৎকার করে যাওয়ার কী কারণ? অবশ্য এ খেলা সবুজ মাঠের খেলা নয়, রাজনৈতিক মাঠের ‘খেলা’।
সরস্বতী পুজোর মণ্ডপ হোক বা রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল, সর্বত্র এখন খেলা হবার ডাক। একটি আদ্যন্ত রাজনৈতিক স্লোগানের সঙ্গে ডিজে বিট লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘খেলা হবে’ গান। স্লোগান থেকে গানে রূপান্তরের মাঝে তাঁর এমনই রূপদান করা হয়েছে যে, তা শুধু ক্রীড়ামোদী নয়, নৃত্যমোদীদের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। অনেকেই ‘খেলা হবে’-র তালে তালে কোমর দুলিয়ে নেচে উঠছেন। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশেও কর্মী-সমর্থকদের মনোবল চাঙ্গা করতে বাজছে খেলা হবে।
‘খেলা হবে’ স্লোগানটির সূচনা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের যুব মুখ, রাজ্য মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের হাত ধরে। স্লোগানটিতে কোথাও বলা হচ্ছে, বাংলা ইউপি-বিহার হবে না, কোথাও বা বলা হচ্ছে তৃণমূলের নেতা ভাঙিয়ে ভোটে জেতা যাবে না। আর প্রতিটি পঙক্তির শেষে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে, ‘বন্ধু এসো খেলা হবে’। তবে কি ‘বন্ধু’ মানে এখানে বিজেপি? দেবাংশুর প্রতিক্রিয়া, ‘তৃণমূলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদেরই গণতান্ত্রিক খেলায় অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।'
বাম, বিজেপি নির্বিশেষে বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, এই ‘খেলা হবে’-র মধ্য দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের তরফে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মতে, ভোট লুঠ, সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে ভয়ের আবহ তৈরি করতেই বানানো হয়েছে এই স্লোগান এবং গান। এই প্রসঙ্গে, দেবাংশু অবশ্য রবীন্দ্রনাথের শরণাপন্ন হচ্ছেন। তাঁর দাবি, তাঁর এই গানের অনুপ্রেরণা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের গানের লাইন উদ্ধৃত করে দেবাংশু শোনালেন, ‘খেলা মোদের লড়াই করা, খেলা মোদের বাঁচা মরা, খেলা ছাড়া কিছুই কোথাও নাই...।'
‘খেলা হবে’ স্লোগানে খেলার নিগূঢ়ার্থ কী, এই স্লোগান এবং গানের স্রোতারা এটিকে কোন অর্থে নেবেন, তা জানতে আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু, এ কথা সত্য যে বঙ্গের রাজনীতি তার স্বভাবজাত ভাবগাম্ভীর্য হারাচ্ছে। অতীতের গণসঙ্গীত, বুদ্ধিদীপ্ত স্লোগানের পরিবর্তে আসছে মনোরঞ্জক ‘খেলা হবে’। শুধু শাসক তৃণমূল নয়, বিরোধী বাম এবং বিজেপির মিছিলেও বাজছে খেলা হবে। তাঁরাও পালটা খেলা খেলে দেওয়ার নিদান দিচ্ছেন। এখন প্রশ্ন, রাজনৈতিক দলগুলি এত খেলা খেললে সাধারণ মানুষ হাঁপিয়ে উঠবে নাতো? করোনায় কাজ হারানো লাখ লাখ মানুষের রুজিরুটির প্রশ্নকে দূরে সরিয়ে রেখে শুধু খেলা হবার ডাক দিয়ে গেলে বিভ্রান্ত মানুষ রবীন্দ্রনাথকে ধার করেই হয়তো বলে উঠবে: ‘কোন খেলা যে খেলব কখন, ভাবি বসে সেই কথাটাই।'
আচ্ছা মৃত্যুর পর কী? মৃত্যুতেই কি সবকিছুর পরিসমাপ্তি নাকি, তার মধ্যে থেকেই সৃষ্টির বীজ উপ্ত হয়?
সেনেগালকে সারা বিশ্ব চিনত বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র, ক্ষুধাপীড়িত দেশ বলে
এতগুলো অবোধ প্রাণকে সহায় সম্বলহীন করে ঘরের মেয়ে কি শ্বশুরঘরে ফিরতে পারে?
সমাজের প্রান্তিক মানুষদের অধিকার রক্ষায় পার্থ সারথি বরাবরই সরব।
নিউ নর্মাল সময়ে মহামারী অনেক কিছু বদলে দিয়ে গেলেও বাঙালির এই চিরায়ত অভ্যাসে বদল আনতে পারেনি।
প্রকারান্তরে, তামিলনাড়ু বা কর্নাটকের মতো রাজ্যের দুই-ভাষা নীতিতেই সিলমোহর দিল কেন্দ্র।